প্রেমিক
প্রেমিক
অভিশাপটা বুকে নিয়েই জন্ম হয়েছিল।
মা বলত, পোড়ারমুখী, বেঁচে আছিস তুই?
আমি বলতাম, মা একটু কোলের কাছে শুই!
বরাদ্দতার সীমা ছিল, মায়ের কোলের ভাগ
আমার পরের ভাইটা ছিল সবারই সোহাগ।
মা বলত, যা, পুকুর ঘাটে বাসন মেজে আন,
আমি বলতাম, সেই সঙ্গেই করেও আসি চান!
মা বলত, ভালোই হবে, তোর ওই মধুর বন
পাড়ার লোকে দেখুক চেখে জ্বলন্ত যৌবন!
মা বলত, পোড়ারমুখী, লাগবে অনেক পণ!
আমি বলতাম, কেন মা? আমার জ্বলন্ত যৌবন?
যৌবন তো খেলা, পুরুষমানুষ চাটে বিছানায়
পণের টাকা না থাকলে মালা জুটবে না গলায়!
মা বলত, শুনতে পেলুম প্রেম করছিস তুই?
দেখবি এবার বলবে, চলো এক বিছানায় শুই!
আমি বলতাম, জানো মাগো, ভীষণ ভালো লাগে
হাত দু'খানি খেলে বেড়ায় পাহাড় চুড়োর আগে!
মা বলত, পোড়ারমুখী, বিষ জোটেনা, বিষ?
রাতের বেলা খেয়ে শুবি, শোধন অহর্নিশ!
আমি বলতাম, পালাবো মা ঘর ছেড়ে একদিন
সে যে বাসে ভীষণ ভালো, শুধবো সকল ঋণ।
মা বলত, ভালোবাসা? ও তো পদ্ম পাতায় জল
অভাব যখন আসবে তখন করবে যে টলমল।
আমি বলতাম বুক চিতিয়ে, জিতবো আমরাই
সে বলেছে, জলদি একটা কর্ম জোটা চাই।
এখন আমি বেশ্যাপাড়ায়, খুপরি মতন ঘর
বরের আজ নেইকো অভাব, রোজ নতুন বর।
প্রেমিক ছিল আমার পাড়ার, বিছানা আস্বাদে
পণের টাকা সে-ই নিল, বিক্রি হলাম খাদে।